নিজস্ব সংবাদদাতা | এবিএন নিউজ
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত এক হাজার মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। তাই পবিত্র রমজান মাসে নামাজ পড়ার জায়গা পাচ্ছে না ফিলিস্তিনিরা। গাজার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ধ্বংস হওয়া মসজিদ পুনর্নির্মাণে প্রয়োজন অন্তত ৫০ কোটি ডলার।
পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার চলমান যুদ্ধে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত গোটা এলাকা। ইসরাইলের হামলা থেকে বাদ পড়েনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মসজিদ, গির্জাসহ ধর্মীয় স্থাপনাও। ফলে রমজান মাসেও নামাজ পড়ার স্থান পাচ্ছেন না গাজাবাসী।
পবিত্র রমজান মাসের তারাবিহ নামাজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাচ্ছে না গাজাবাসী, কারণ বেশিরভাগ মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। এমনকি সেখানে ওযু করার জন্যও মিলছে না পর্যাপ্ত পানি। স্বেচ্ছাসেবীরা নামাজ আদায়ের জন্য সেখানে ছোট ছোট জায়গা তৈরি করেছেন। সীমিত পরিসরে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা।
গাজার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গাজায় থাকা ১,২০০ মসজিদের মধ্যে কমপক্ষে এক হাজার মসজিদ পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া, ৭ অক্টোবরের পর ইসরাইলের হামলায় ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজসহ শতাধিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব নিহত হয়েছেন।
ফলে, নামাজ পড়ানোর জন্য মিলছে না লোকও। ইসরাইলের চলমান হামলায় গাজার পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ ভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তাই রমজান মাসেও কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারছেন না তারা।
এই পরিস্থিতিতে, গাজার জাবালিয়ায় তারাবির নামাজ আদায় করতে একটি অস্থায়ী মসজিদে জড়ো হয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। অস্থায়ী এই মসজিদেই চলছে ইবাদত বন্দেগী
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরাইলিরা রাফার আল হুদা মসজিদেও হামলা চালিয়েছে। গত মাসে হামলা চালানো এ মসজিদটি সেখানকার অন্যতম পুরান মসজিদ ছিলো। এটি ১৯৫২ সালে নির্মিত এই মসজিদের সঙ্গে একটি লাইব্রেরিও ছিল। এখানে দেড় হাজারের বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। ইসরাইলি হামলায় মসজিদটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে সীমিত পরিসরে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা।
তবে আসন্ন রমজান মাসে ফিলিস্তিনিরা নতুন করে প্রস্তুতি নিয়েছেন। তারা আল হুদা মসজিদে জমায়েত হয়ে নামাজ আদায় করছেন।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের নতুন প্রস্তাবেও ইসরাইলের নাযুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের নতুন প্রস্তাবেও ইসরাইলের না
এর আগে গত অক্টোবরে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ধসে পড়ে গাজার ঐতিহাসিক আল ওমারি মসজিদ। ওই সময়ে সামাজিক মাধ্যমে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদের ৩টি ছবি প্রকাশ করে। ছবিতে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদটি বিবর্ণ রূপ দেখা যাচ্ছে। যেখানে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতেন সে জায়গাটিও সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
হামাস ও ইসরাইলের মধ্যকার চলমান যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি কষ্টের শিকার হচ্ছে নির্দোষ গাজাবাসী। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, প্রায় প্রতিদিন গাজার শিশুরা অনাহারে ও অপুষ্টির শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। এছাড়া রমজান মাস জুড়ে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভিক্ষ। যেখানে খাবার বিতরণ করতেছে সেখানে নির্মম ভাবে হত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল বাহিনী।